1. rkarimlalmonirhat@gmail.com : Rezaul Karim Manik : Rezaul Karim Manik
  2. maniklalrangpur@gmail.com : রংপুর সংবাদ : রংপুর সংবাদ
পুলিশের গুলিতে নিহত শিশু সুরাইয়ার পরিবারের খবর নেয়নি প্রশাসন - রংপুর সংবাদ
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

পুলিশের গুলিতে নিহত শিশু সুরাইয়ার পরিবারের খবর নেয়নি প্রশাসন

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১২৪ জন নিউজটি পড়েছেন

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ও গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হলে ঘোষিত ফলে ইউপি সদস্য পদে বাবুল হোসেন ৪৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।

অপর তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে আজাদ আলী ৪৪২ ভোট, খালেদুর রহমান ২৪৫ ভোট ও কামালউদ্দিন ২১৩ ভোট করে পেয়েছেন। কিন্তু ওই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা, তারা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন নির্বাচন কাজে জড়িততের বিরুদ্ধে। এনিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে উত্তেজিত হয়ে উঠেন তারা।

এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতে কাজ না হওয়ায় হামলাকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। সে সময় মা মিনারা বেগমের কোলে থাকা সুরাইয়া (৮) মাথায় আঘাত পেয়ে নিহত হয়। তবে গুলি না অন্য কিছুতে সুরাইয়া আঘাত পেয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নন পুলিশ। শিশুটির বাবার নাম মনোয়ার বাদশা। তিনি পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা। মায়ের নাম মিনারা বেগম। মিরডাঙ্গী দীঘিপাড়া এলাকার তারা বসবাস করেন। তাঁদের এক ছেলে দুই মেয়ে। ছেলের নাম মেরাজুল। সে সবার বড় এবং মিরডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। মেয়ে সুমাইয়া মিরডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সুরাইয়া ছিল সবার ছোট।

মিনারা বেগম বলেন, ভোট শেষ হলেও স্বামী (মনোয়ার বাদশা) বাড়ি ফেরেননি। তাঁকে ডাকতে সুরাইয়াকে কোলে নিয়ে কেন্দ্রে যান তিনি। কাছাকাছি গিয়ে কেন্দ্রে ঝামেলার কথা শুনতে পান। নিরাপদ ভেবে রাস্তার পাশে জহিরুলের বাড়ির সামনে মেয়েকে কোলে নিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁর সামনে দিয়ে পুলিশের গাড়ি যাচ্ছিল। হেরে যাওয়া মেম্বার প্রার্থীর লোকজনের সঙ্গে পুলিশের ঝামেলা শুরু হয়। পুলিশ তাদের দিকে গুলি ছোড়ে। বিকট শব্দ হয়। বাতাসের গতিতে মায়ের কোল থেকে ছিটকে মাটিতে পড়ে যায় সুরাইয়া। মিনারা বেগম আরও বলেন, আর কিছু বলতে পারি না। পরে হাসপাতালে জানতে পারি, আমার সুরাইয়া আর নেই। মেয়ে হারানোর শোকে কাতর হয়ে আজ স্বামী-স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছি। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছি না। শিশুটির মায়ের প্রশ্ন- কী অপরাধ ছিল সুরাইয়ার? আট মাস বয়সে তাকে গুলিতে মরতে হলো? এমনটি ঘটবে ভাবতেও পারেননি। এ ঘটনার পর শিশুটির বাবা-মাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা ও আশ্রয়ণের ঘর দেওয়া হয়।

পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসার বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। মামলার তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই।

মেয়ের মরদেহ দাফনের আগে নানা প্রলোভন দেখালেও প্রশাসন পরে আর খবর নেয়নি বলে দাবি করেন সুরাইয়ার বাবা। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। আমাদের জীবনের মূল্য নেই। এখন পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও থেকে একবার এবং রংপুর থেকে তদন্তকারী লোক এসেছিল। তাঁদের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলারও সুযোগ হয়নি। আমার সুরাইয়া হত্যার বিচার কেমনে পাব, দিন আনি দিন খাই। কারও কাছে পরামর্শ করতে যেতে পারছি না। আশ্রয়ণের ঘরে ছেলেমেয়েসহ স্ত্রীকে নিয়ে অনেক কষ্টে বসবাস করছি।

রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার বলেন, যে কোনো প্রয়োজনে পরিবারটিকে সাধ্যমতো সহায়তা করা হবে।

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | রংপুর সংবাদ.কম
Theme Customization By NewsSun