দিনাজপুরে বিদ্যালয়ে ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর ৬ মাস বেতন বন্ধ
Rezaul Karim Manik
জানুয়ারী ৩০, ২০২৩, ৬:৫৯ PM
স্টাফ রিপোর্টার:
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের মধ্যে চাপা পড়ে আছেন রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা। ছয় মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে ১৫ শিক্ষক-কর্মচারীর মাসিক বেতন। মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
এ বিষয়ে ইতিপূর্বে মৌখিকভাবে বিভিন্ন দফতরে অবগত করলেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে অবগত করলে তিনি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই এডহক কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন নূরবানু বেগম। এ অবস্থায় ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা গোপনে তার স্বামীকে সভাপতি বানিয়ে নিয়মিত কমিটির জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেন।
কিন্তু অভিভাবকদের আপত্তিদের মুখে তা অনুমোদন হয়নি। কেন এই কমিটি অনুমোদন হলো না সে জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তার নিকটাত্মীয় এক অভিভাবককে দিয়ে আদালতে মামলা করলে সেটি খারিজ হয়। এমন জটিলতায় বিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কমিটি না থাকায় গত আগস্ট মাস থেকে বেতন বন্ধ বিদ্যালয়টির ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর। এমতাবস্থায় ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ও ১৯৯৭ সালে এমপিওভুক্ত হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ সংখ্যা ১৩। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে এবং কর্মচারীর পদ সংখ্যা পাঁচ। কাগজে-কলমে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী প্রায় ২১৫ জন। কিন্তু বিদ্যালয়ের এই চলমান সমস্যার কারণে ২০২৩ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে মাত্র ১৮ জন ভর্তি হয়েছে। যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকাংশে কম।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক আশিষ কুমার দাস বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের উদাসীনতা ও অদক্ষতায় স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। এতে অভিভাবকরা যেমন স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, তেমনি ছয় মাস বেতন বন্ধ থাকায় আমরাও চরম বিপদে পড়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নূরবানু বেগম জানান, কমিটি জটিলতার কারণে সহকারী শিক্ষকরা বিলে স্বাক্ষর না করায় বেতন উত্তোলন সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুরাহা করে বেতন প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন, এই সমস্যা নিরসনে আমরা চেষ্টা করছি। পরিচালনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে। এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার জানান, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ সত্যিই দুঃখজনক বিষয়। এই উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসন ও দ্রুত সময়ে বেতন-ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করে স্কুলের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছি।
Related
আপনার মতামত লিখুন :