পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অফিস টাইম অনুসরণ আর নিজ দায়িত্ব পালনই শেষ কথা নয়। বাড়তি কিছু দায়িত্বও পালন করতে হয়। না হলে কর্মক্ষেত্রে এগোনো কঠিন। তাই প্রথাগত কাজের পাশাপাশি বাড়তি কিছু দক্ষতা অর্জন করতে হয়। সেই সঙ্গে নিজের চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহতায়ালার কাছে প্রার্থনাও করতে হয়। সম্প্রতি দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইটে এক লোক কাজে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কোন আমল করা যায়, এ মর্মে জানতে চান। তিনি বলেন, ‘কর্ম দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কিছু দোয়া বলে দিন। যাতে করে মস্তিষ্ক আরও বেশি কাজ করে এবং কাজ খুব সহজে বুঝে আসে।’
চিঠির উত্তরে দেওবন্দের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ‘প্রতিদিন (আল্লাহর গুণবাচক নাম) ইয়া মুগনিউ (অর্থ অভাব মোচনকারী) এগারো শ’ বার এবং ইয়া ফাত্তাহু (অর্থ উন্মোচনকারী, প্রসারক) ১০১ বার পড়া যেতে পারে।’
ইসলামি স্কলারদের মতে, ‘ইয়া মুগনিউ’ বেশি বেশি পড়লে আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহর আরেকটি গুণবাচক ‘ইয়া ফাত্তাহু।’ আলেমদের মতে, বৈষয়িক ও আধ্যাত্মিক যেকোনো বিষয় যখন জটিল আকার ধারণ করে, তখন সে সব সংকট দূর করতে সমাধানের পথ খুলে দেন মহান আল্লাহ। আর এ জন্যই আল্লাহর অন্যতম নাম ফাত্তাহ। মহান আল্লাহ সব জটিল সমস্যা ও অভাব-অভিযোগ এমনভাবে সমাধান করেন, যা কোনো মানুষ কল্পনাও করতে সক্ষম নয়। মানুষের মনে যদি কোনো দুঃখ-বেদনা ও হতাশা থেকে থাকে তাও মহান আল্লাহ দূর করতে পারেন এবং যেকোনো সংকট অথবা পরাজয়কে খুব সহজেই স্বাচ্ছন্দ্য, বিজয় ও কল্যাণ দ্বারা বদলে দিতে পারেন।
মহান আল্লাহ যখন দরিদ্রকে অর্থ-সম্পদ দান করেন তখন তার অভাব ও অসচ্ছলতার দুঃখ ও বিষণœতা দূর হয়, তিনিই গবেষকের মনকে জ্ঞানগত জটিল সমস্যা সমাধানের সূত্র জানিয়ে তাকে প্রশান্ত করেন। সুরা ফাতিরের দ্বিতীয় আয়াতে মহান আল্লাহ বলছেন, ‘আল্লাহ মানুষের জন্য অনুগ্রহের মধ্য থেকে যা খুলে দেন, তা ফেরাবার কেউ নেই এবং তিনি যা বারণ করেন বা বন্ধ রাখেন, তা কেউ পাঠাতে বা খুলতে পারে না তিনি ছাড়া। তিনি অনন্য ও অতুলনীয় পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।’ অর্থাৎ আল্লাহ যদি কাউকে কিছু দিতে চান তাতে বাধা দেওয়ার, তা থেকে বঞ্চিত করার কেউ নেই। আর আল্লাহ যদি কাউকে কোনো নেয়ামত থেকে বঞ্চিত করতে চান তাহলে দুনিয়ার কারও সাধ্য নাই তাকে সেই নেয়ামত দেওয়ার। তাই সব সৃষ্টিই কোনো কিছু লাভের জন্য মহান আল্লাহর ফাত্তাহু নামের মুখাপেক্ষী।
দেওবন্দের ওয়েবসাইটে কাজের দক্ষতা বৃদ্ধিও জন্য ‘সুরা আলামনাশরাহ’ পড়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করাও ফজিলতের বিষয়।’ এসব আমলের মাধ্যমে আশা করা যায়, আল্লাহতায়ালা কাজের দক্ষতা বাড়িয়ে দেবেন। আপনার কাজ আল্লাহ সহজ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।
তবে এটাও মনে রাখতে হবে, অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ নিয়ম মেনে, আদায় করতে হবে। দায়িত্বে অবহেলা কিংবা কাজে ফাঁকি দিয়ে শুধু আমলের মাধ্যমে দক্ষতা বাড়বে না, উন্নতিও আসবে না।
Leave a Reply