নিজস্ব প্রতিবেদক:
ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত বলে করেন ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া ৭১ শতাংশ মানুষ মনে করেন দেশ সঠিক পথেই যাচ্ছে। আর ৮১ শতাংশ মানুষ চান সংস্কার কার্যক্রম শেষ করতে যত দিন প্রয়োজন, তত দিন ক্ষমতায় থাকুক অন্তর্বর্তী সরকার।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) পরিচালিত ‘পালস সার্ভে ২০২৪: জনগণের মতামত, অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক জনমত জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ‘অভ্যুত্থানের চল্লিশ দিন: মানুষ কী ভাবছে’ শিরোনামে আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়।
জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন বিআইজিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মির্জা এম হাসান। তিনি জানান, টেলিফোনে গ্রাম ও শহরের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ২ হাজার ৩৬৩ জন মানুষের মতামতের ভিত্তিতে জরিপের ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। গত ২২ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, শতকরা ৮১ ভাগ মানুষ চান যে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার সম্পন্ন করার জন্য যত দিন প্রয়োজন, তত দিন ক্ষমতায় থাকুক। আর শতকরা ১৩ ভাগ মানুষ মনে করেন অতিদ্রুত নির্বাচন দিয়ে সরকারের ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত। এ ছাড়া অর্থনৈতিকভাবে দেশ ঠিক পথে যাচ্ছে বলে মত দিয়েছেন ৬০ শতাংশ মানুষ।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা কী—জরিপে এমন প্রশ্নে ৪০ শতাংশ মানুষ অর্থনীতির কথা বলেছেন। ১৫ শতাংশ বলেছেন বন্যার কথা। রাজনৈতিক অস্থিরতাকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ১৩ শতাংশ মানুষ। আর ৭ শতাংশ মানুষ প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে পরিণত হওয়াকে সমর্থন করেছেন ৮৩ শতাংশ মানুষ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত বলে মত দেন ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ। আর দলীয় শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দেন ৮৪ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ।
জরিপের ফলাফল তুলে ধরে মির্জা এম হাসান বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ কি ঠিক পথে যাচ্ছে নাকি ভুল পথে যাচ্ছে—এমন প্রশ্নে ৭১ শতাংশ বলেছেন ঠিক পথে যাচ্ছে। এর আগে এ বছরের শুরুতে তাঁদের জরিপে এই প্রশ্নে ৪১ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন দেশ ঠিক পথে যাচ্ছে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এক–এগারোর পরে যেসব সংস্কার করা হয়েছিল, সেগুলোর বাস্তবায়ন হলে এই পরিস্থিতি হতো না। আইন সংবিধান সংস্কার হলেই শুধু হবে না, এসব বাস্তবায়ন করতে হবে।’
Leave a Reply