রংপুর অফিস:
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় প্রায় ২০ দিনের টানা বর্ষণ আর উজানের ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থানে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চলসহ চরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।
গত শনিবার দিবাগত রাতে ফের তিস্তার নদীর পানি বেড়ে তীব্র স্রোতে হাসানটারী হয়ে ভাংগাগড়ার পাকা রাস্তার প্রায় ৫০ ফিট ভেঙে যায়। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় পানি মর্নেয়ার নতুন এলাকায় প্রবেশ করছে। আবার শেখপাড়া ব্রিজটিও ভেঙে গেছে। রাস্তা ও ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় পানি প্রবেশ করে ফসলি জমির ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রায় ৩-৪ গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ।
রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় পানির স্রোতে বাড়ি ভেঙে গেছে আব্দুর রশিদ নামের একজনের। হুমকিতে পড়েছে নুরনবী পুসু, তালেব, আলতাব, নুর ইসলাম, রমজান, মোজাফফর, লেয়াকত, মনতাজুল, বারীর বাড়ি ও আশ্রয়ণ ঘর। অন্যদিকে, এ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার শতাধিক বাড়ি ভেঙে গেছে তিস্তায়।
আব্দুর রশিদ বলেন, ‘শনিবার রাতে পানি আঘাত হানে পাকা রাস্তাটিতে। একপর্যায় সেটি ভেঙে যায়। বাঁশ, গাছ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করেও ভাঙন রোধ করতে পারি নাই।’
আলশিয়ার মোড়ের শরিফুল বলেন, ‘পানি এসে রাস্তায় ধাক্কা দিলে দ্রুত আমরা বস্তায় মাটি ভরাট করে রক্ষা করি। এখানকার প্রায় ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’
তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে গঙ্গাচড়ায় মর্নেয়া ইউনিয়নের আলফাজটারী, হাসানটারী, আনছারেরটারী, তালপট্টি, নরশিং, আলমারবাজার, শেখপাড়া, নিলারপাড়, আলশিয়ারমোড়, ভাংগাগড়া, লক্ষীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, পশ্চিম ইচলি, পুর্ব ইচলী, বাগেরহাট, কেল্লারপাড়, চল্লিশাল, জয়রামওজা, কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, চিলাখালচর, মটুকপুরচর, নোহালী ইউনিয়নের মিনারবাজার, নোহালীচর, বৈরাতী, গজঘণ্টা ইউনিয়নের আলালচর, ছালাপাকচর, গাওছোয়াসহ চরাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার পরিবার কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানিবন্দি মানুষেরা উঁচু জায়গা, রাস্তার উপরে পলিথিন টাঙিয়ে গরু, ছাগল ও জিনিসপত্র নিয়ে কোনো রকমে জীবনধারণ করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় চলাচলের রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। ভেসে গেছে পুকুর, জলাশয় ও মৎস্য খামারের মাছ। পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে চাষ করা বিভিন্ন ফসল।
পানিবন্দি ও ভাঙন কবলিত ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, এলাকা ঘুরে ঘুরে ভাঙন ও পানিবন্দি মানুষের খোঁজ–খবর নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছেন।
রাস্তা ও ব্রিজ ভাঙার সংবাদ পেয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে যাওয়া রাস্তা সংস্কার করা হবে বলে জানান তিনি। এ সময় তিনি ১৫০ পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করেন।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: আলহাজ্ব নুরুজ্জামান আহমেদ, মন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় | সম্পাদক: রেজাউল করিম মানিক | অফিস: ২য় তলা, দৌলত কমপ্লেক্স, গুপ্তপাড়া, রংপুর