মাহির খান:
রংপুরে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। নামাজ শেষে বাংলাদেশে শান্তি-সমৃদ্ধি, স্থিতিশীলতাসহ সারাবিশ্বের মুসলমানদের ওপর দমন, নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য-সম্প্রীতি কামনা করে মহান আল্লাহর কাছে অশ্রুসিক্ত প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা। এরপর চিরাচরিত কোলাকুলি আর করমর্দনের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল ৮টায় প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় রংপুর জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে। এক ঘণ্টা পর একই মসজিদে দ্বিতীয় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সম্প্রীতি কামনায় মোনাজাত করা হয়। কয়েক হাজার মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন।
সেখানে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্টজন এবং সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।
এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শুরুর আগে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি মেয়র।
এ সময় সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা পরিচ্ছন্ন রংপুর মহানগর গড়তে সবাইকে নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু জবাই করাসহ সঠিকভাবে বর্জ্য সংরক্ষণের আহ্বান জানান। তিনি দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ১২ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দেন। এর জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় রংপুর জেলা পুলিশ লাইন্স মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জেলার সবচেয়ে বড় মসজিদ কারামতিয়া জামে মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। এছাড়াও রংপুর নগরের মহল্লাভিত্তিক মসজিদ ও বিভিন্ন ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অন্যদিকে পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া উপজেলার স্থানীয় মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠে সুবিধাজনক সময়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
রংপুর জেলার প্রায় ৬ হাজার মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ৭৫টিসহ জেলার সহস্রাধিক ঈদগাহ মাঠ ও পাড়া-মহল্লার মসজিদ-মাদরাসাগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কোনো কোনো মসজিদে ছিল একাধিক ঈদ জামাতের ব্যবস্থা।
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন থেকে নগরীর সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক লেখা পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। এছাড়া ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে জেলার হাসপাতাল, এতিমখানা, কারাগার ও শিশু পরিবারগুলোতে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে।
Leave a Reply