বুধবার (১১জানুয়ারী)বিকেল ৩ টায় লালমনিরহাট পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে অপহরণের শিকার শিক্ষককে উদ্ধার ও অপহরণের সাথে জড়িত দুজনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে জানান, চলতি বছরের গত ৬ জানুয়ারি সকালে অজ্ঞাতনামা ১২/১৩ জন লোক একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস ও একটি সাদা রং এর প্রাইভেটকার যোগে ঐ শিক্ষকের বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়ায়। অপহরণকারীদের একজন বাড়ীর মুল দরজার দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশ করে দরজা খুলে দিলে বাহিরে থাকা অন্যান্যরা বাড়ীতে ঢুকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রথমে শিক্ষকের ভাই মোঃ রুহুল আমিন এর ঘরে ঢুকে তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকে। তখন নুরুল আমিন ঘর থেকে বের হলে অপহরণ করতে আসা ব্যক্তিরা রুহুলকে ছেড়ে দিয়ে নুরুল আমিনকে ধরে এবং তাকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যেতে থাকে। এ সময় শিক্ষকের স্ত্রী মাহফুজা বেগম, ভাই, রুহুল আমিন এবং অন্যান্যরা অপহরণকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা এসপি অফিসের লোক বলে জানায়।
তাদের নিকট পুলিশের আইডি কার্ড দেখতে ও নূরুলকে নিয়ে যাওয়ার কারন জানতে চাওয়ায় বাড়ীর লোকজনদের এলোপাতাড়ী মারপিট করে তারা। এতে শিক্ষকের চাচা আবু তালেব ও ভাই রুহুল আমিন আহত হয়।পরে শিক্ষককে জোরপূর্বক গাড়ীতে উঠিয়ে আদিতমারী হয়ে লালমনিরহাট অভিমুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনার পরদিন(৭ জানুয়ারী) আদিতমারী থানায় অপহৃত শিক্ষক নূরুল আমিনের ছেলে বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ শিক্ষক নূরুল আমিনকে উদ্ধারের জন্য তৎপরতা চালায়।টানা ০৫ দিন অনুসন্ধান চালিয়ে অপহৃত শিক্ষক ও অপহরণকারীদের অবস্থান সনাক্ত করে ১১ জানুয়ারী ভোরে আদিতমারী থানা পুলিশের একটি টিম ঢাকার তেজগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরণের সাথে জড়িত ০২ জন আসামীকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন,টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ভোলার পাড়া এলাকার মোঃ মজিবর রহমানের পুত্র মোঃ আব্দুল বারী(৪৩) ও নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার ভূগী এলাকার মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের পুত্র মোঃ শফিউল আলম(৩২)।গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।
প্রেস রিলিজে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভবে ধারণা করা হচ্ছে প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন এবং অপহরণকারীদের মধ্যে পূর্বের টাকা লেনদেন বিষয় থাকতে পারে। ঘটনার প্রকৃত রহস্য ও অপহরণের প্রকৃত কারণ পরবর্তী তদন্ত সাপেক্ষ্যে উদঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply