পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহলের দইখাতা নাজিরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত হওয়ার পর পুরাতন ৫ জন শিক্ষককে বাতিল করার অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকে শিক্ষকতা করে আসা পুরাতন শিক্ষকদের কোন প্রকার সুযোগ না দিয়েই প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বিনিময়ে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলাউদ্দিন আলাল ও প্রধান শিক্ষক মোজাহেদুল ইসলাম গোপনে নতুন শিক্ষকদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা করে নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেছেন। এমনকি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তালিকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষকদের।
এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের পক্ষে
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাসেল হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে আমদের মোটা অংকের অনুদানে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করা হয়। শুরু থেকে বিনাবেতনে নিরলস পরিশ্রমের ফলেই বিদ্যালয়টি খুব অল্প সময়ে এমপিওভুক্ত হয়েছে। কিন্তু গত বছর এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকে পুরাতন শিক্ষকদের নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিদ্যালয়ের ত্যাগী ও পরিশ্রমী শিক্ষক রাসেল হোসেন, গোকুল চন্দ্র রায়, আয়েশা খাতুন, শাহনাজ পারভীন ও মজিবুল ইসলামকে বাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। তারা রাতারাতি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে তাদের নামের তালিকা শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করেছেন। হঠাৎ করে দীর্ঘদিন শ্রম দিয়ে আসা শিক্ষকদের অমানবিকভাবে বাদ দেয়ার কারণে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় নিয়োগ স্থগিতসহ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের অনিয়ম তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের।
এদিকে বিদ্যালয়ের নামে ২ বিঘা জমি স্টাম্পে লিখে দিয়ে নিজের সন্তানকে চাকরি নিয়ে দেন আমজাদ আলী নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তি। তবে সেই দুই বিঘা জমি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলাউদ্দিন আলাল নিজের নামে নিয়ে বিদ্যালয়ে দান করে নিজেই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বনে যান বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মোজাহেদুল ইসলাম বলেন, নিবন্ধন না থাকায় পুরাতন শিক্ষকদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এখানে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন হয়নি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলাউদ্দিন আলাল বলেন, আমজাদ আলী নামে ওই ব্যাক্তির অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি জমির বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন। কোন জমি দান করেননি।
কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ের বিষয়ে নানা অভিযোগ পেয়েছি। কয়েকজন শিক্ষককে বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কথা জানতে পেরেছি। এছাড়া আমজাদ আলী নামে এক লোকের জমি বিদ্যালয়ের নামে দানের পরেও তাকে দাতা সদস্য না করে আরেকজন দাতা হয়েছেন মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। খুব শিঘ্রই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবো।
Leave a Reply