1. rkarimlalmonirhat@gmail.com : Rezaul Karim Manik : Rezaul Karim Manik
  2. maniklalrangpur@gmail.com : রংপুর সংবাদ : রংপুর সংবাদ
নবীজি (সা.) কর্মময় জীবনের সবক দিয়েছেন - রংপুর সংবাদ
শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০৫:১২ অপরাহ্ন

নবীজি (সা.) কর্মময় জীবনের সবক দিয়েছেন

ইসলামিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৮ জন নিউজটি পড়েছেন

মানুষ বড় হয় কীসে? দামি পোশাকে? বড় বাড়িতে? ব্র্যান্ড নিউ গাড়িতে? না, এসব কিছুই মানুষকে বড় করে না। মানুষ বড় হয় কাজে। কাজ যত ছোটই হোক না কেন আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়তে সুন্দরভাবে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করলে সেই কাজ অবশ্যই আপনাকে বড় করবেই। আমরা দেখি রাস্তার পাশে ঝালমুড়ি বিক্রি করে, চটপটির দোকান দিয়ে একজন মানুষ সফল।

আবার অন্য একজন বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে বছরের পর বছর ঘুরে বেড়ায় কিন্তু চাকরি পায় না; কিংবা চাকরি পেলেও বছরের পর বছর একই মানের জীবন কাটায়। এমনটা কেন হয়? কাজের কারণেই। ওই যে ঝালমুড়িওয়ালার কথা বললাম, যিনি পাঁচ বা সাত বছর ঝালমুড়ি বিক্রি করে হালাল পথে সম্পদ গড়েছেন তিনি আসলে নিজের কাজকে ছোট করে দেখেননি। ক্রেতাকে ভাগ্যের জিয়নকাঠি মনে করে আন্তরিকভাবে মুড়ি খাইয়েছেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখেছেন। আর যে কর্মকর্তা বছরের পর বছর একই পোস্টে আছেন, অফিস, বাড়ি কোথাও তার উন্নতি নেই, তিনিও কিন্তু কাজের কারণেই এক জায়গায় আটকে আছেন। তিনি নিজেকে উন্নতি করার ব্রত গ্রহণ করতে পারেননি। নিজের যোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করেননি। তিনি ভেবেছেন, চাকরি যেহেতু হয়েছে এখন নিশ্চিন্তার জীবন শুরু। মাস শেষ হবে আর বেতন তুলব। সুখের দিন শুরু। আসলে পরিশ্রম ছাড়া নিজেকে ওপরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা-সাধনা ছাড়া সুখী হওয়া যায় না। সুখী হওয়া যায় কাজে। ইসলাম কাজকে গুরুত্ব দিয়েছে। নবীজি কাজকে ইবাদত বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। কাব বিন আজরা (রা.) বলেন, একবার এক ব্যক্তি রসুল (সা.)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তিনি দেখলেন সব সাহাবিই কর্মব্যস্ত এবং কঠোর পরিশ্রম করছেন। সাহাবিদের একজন জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রসুল, আমাদের এ কাজ যদি ইবাদত হিসেবে পরিগণিত হতো তাহলে কতই না ভালো হতো। তখন রসুল (সা.) বললেন, কেউ যদি নিজ সন্তানের জন্য কাজে বের হয় তবে সে আল্লাহর পথেই ইবাদতে মগ্ন আছে। এভাবে সে যদি বৃদ্ধ পিতা-মাতার জন্য কাজ করে, নিজ স্ত্রীর জন্য কিংবা নিজের প্রয়োজনেই পরিশ্রম করে সেটাও আল্লাহর কাছে ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু মনে রেখ, যদি দাম্ভিকতা ও প্রদর্শনের প্রতিযোগিতার নিয়তে কাজে বের হয় তাহলে সে শয়তানের পথে আছে। (তারগিব ওয়াত তাহরিব)।

অবশ্যই রসুলুল্লাহ (সা.) কাজ পছন্দ করতেন এবং উম্মতকে কর্মে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বেকারত্ব ও অলসতা ঘৃণা করতেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, একজন মানুষের শ্রেষ্ঠ অর্জন হলো নিজ হাতে কামাই করা খাবার। (বুখারি)। অন্যের থেকে চেয়ে খাওয়া বা অন্যের ওপর জীবন নির্ভর করা তিনি ঘৃণা করেছেন। তিনি বলেছেন, অন্যের কাছে চাওয়ার পর সেখান থেকে তাড়া খাওয়ার চেয়ে বরং নিজে দড়ি পাকিয়ে বাজারে বিক্রি করে জীবন ধারণ অনেক উত্তম। (বুখারি)। অনেকে হয়তো বলবেন, দড়ি পাকানো তো খুবই ছোট কাজ, কিন্তু কাজ যতই ছোট হোক এতে আত্মার স্বাধীনতা রক্ষা হয়। কিন্তু অন্যের কাছে ভিক্ষা করলে বা অন্যের দয়ার ওপর নির্ভর করলে নিজের অন্তর মরে যায়, মনের আনন্দ চলে যায়। এ কারণেই নবীজি (সা.) ছোট কাজকেও গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করেছেন। কাজের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনেও আল্লাহতায়ালা গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা যিনি তোমাদের জন্য জমিনকে অনুগত করেছেন, অতএব তোমরা তাঁর বুকে বিচরণ কর এবং তাঁর দেওয়া রিজিক খাও। আর জেনে রাখ! তাঁরই কাছে তোমাদের ফিরে আসতে হবে।’ (সুরা মুলক, আয়াত ১৫)।

এভাবে তিনি সমুদ্রকেও অনুগত করেছেন ফুড, জুয়েলারি ও জলযান চলাচলসহ হরেক কল্যাণ আধার হিসেবে। তা ছাড়া এতে কাজ করা এবং বিভিন্ন উপকার লাভের ধারণা তো আছেই। আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা যিনি কাজে লাগিয়েছেন সমুদ্রকে, যাতে তা থেকে তোমরা তাজা মাংস খেতে পার এবং তা থেকে বের করতে পার পরিধেয় অলংকার। তুমি তাতে জলযানগুলো পানির বুক চিরে চলতে দেখবে। এসবের ব্যবস্থা এ জন্যই করা হয়েছে যেন তোমরা আল্লাহর দয়া অন্বেষণ করার পাশাপাশি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হও। (সুরা নাহল, ১৪)।

আজ আমাদের জীবন আলস্যে ভরে গেছে। চারদিকে শুধুই স্থবিরতা। মোবাইল নিয়ে বসলে ৪-৫ ঘণ্টা কাটিয়ে দিই। গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইল টিপে সারা সকাল ঘুমিয়ে কাটাই। এ ধরনের আলস্য থেকে আমাকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের গা-ঝাড়া দিয়ে দাঁড়ানোর তৌফিক দিন। আমিন।

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | রংপুর সংবাদ.কম
Theme Customization By NewsSun