1. rkarimlalmonirhat@gmail.com : Rezaul Karim Manik : Rezaul Karim Manik
  2. maniklalrangpur@gmail.com : রংপুর সংবাদ : রংপুর সংবাদ
পোড়ামাটির অন্যতম নিদর্শন কান্তজির মন্দির - রংপুর সংবাদ
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২৬ অপরাহ্ন

পোড়ামাটির অন্যতম নিদর্শন কান্তজির মন্দির

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৯৫ জন নিউজটি পড়েছেন

দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে কাহারোল উপজেলায় নয়াবাদ মসজিদ ও কান্তজির মন্দিরের অবস্থান। ঢাকা থেকে বাস ও ট্রেনে সরাসরি দিনাজপুর চলে আসতে পারেন। আবার আকাশ পথে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে বাসে করে দিনাজপুরের বারোমাইল নামক স্থানে নামতে হবে। এরপর এক কিলোমিটারের হাঁটা পথ পাড়ি দিলেই পৌঁছে যাবেন শান্ত ও স্নিগ্ধ প্রকৃতির কান্তনগর গ্রামে।

কান্তজির দর্শন শেষ হলে অদূরে অবস্থিত নয়াবাদ মসজিদটি দেখতে ভুলে যাবেন না। ছোট্ট সুন্দর এই মসজিদের প্রাকৃতিক পরিবেশ আপনাকে মুগ্ধ করবে। আর কান্তজির মন্দিরের সঙ্গে বোনাস হিসেবে ঘুরে আসতে পারেন দিনাজপুরের আরও কিছু বিখ্যাত স্থান যেমন- রামসাগর, সুখসাগর, দিনাজপুর রাজবাড়ী ও শিংরা ফরেস্ট।

মন্দিরটিকে কান্তজিউ বা কান্তজির আবার কান্তনগর মন্দির নামেও ডাকা হয়। এছাড়া নবরত্ন মন্দির নামেও অনেকের কাছে পরিচিত। কারণ তিনতলা বিশিষ্ট মন্দিরের ৯টি চূড়া বা রত্ন ছিল। দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে কাহারোল উপজেলার কান্তনগর গ্রাম ঢেপা নদীর তীরে কান্তজিউ মন্দির অবস্থিত। জনশ্রুতি আছে, শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহের অধিষ্ঠানের জন্য এ মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল।

মন্দিরের উত্তর পাশে ভিত্তিদেবীর শিলালিপি থেকে জানা যায়, তৎকালীন দিনাজপুরের মহারাজা ও জমিদার প্রাণনাথ রায় এই মন্দিরের কাজ শুরু করেন। কিন্তু ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যুর পর তার ছেলে ১৭৫২ সালে মন্দিরটির নির্মাণকাজ শেষ করেন।

গঠন বিন্যাস, স্থাপত্যশৈলী ও কারুকার্য ইত্যাদির সংমিশ্রণে মন্দিরটি হয়ে উঠেছে অত্যন্ত নয়নাভিরাম। জমকালো পিরামিড আকৃতির মন্দিরটি তিনটি ধাপে উঠে গিয়েছে এবং তিন ধাপের কোণগুলোর উপরে ৯টি অলংকৃত শিখর রয়েছে। যা দেখে মনে হতে পারে একটি উঁচু ভিত্তির উপর একটি রথ দাঁড়িয়ে আছে। বর্গাকার একটি প্রধান প্রকোষ্ঠকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ ইমারতটি নির্মিত হয়েছে।

পাথরের উপর দাঁড়ানো মন্দিরের উচ্চতা ৫০ ফুটের বেশি নয়। মন্দিরের নিচ তলায় ৩১টি খিলান, দ্বিতীয় তলায় ৩১টি খিলান এবং তৃতীয় তলায় মাত্র ৩টি খিলান রয়েছে। মহাভারত-রামায়ণের নানা বিষয়ের উপস্থিতি এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ের অলঙ্করণে কৃষ্ণের নানা কাহিনী, সমকালীন সমাজজীবনের বিভিন্ন ছবি এবং জমিদার ও অভিজাতদের বিনোদন চিত্র রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের অলংকরণে বনের মধ্যে শিকার দৃশ্য, হাতি, ঘোড়া ও উটসহ রাজকীয় শোভাযাত্রা সুন্দরভাবে সজ্জিত আছে। এছাড়া পালকিতে বসে থাকা হুকা হাতে জমিদার, নদীর দৃশ্য, লোকজনে ঠাসা নৌকায় আনন্দ-উৎসবে মগ্ন দৃশ্যপটও বিদ্যমান।

তৃতীয় ধাপের অলংকারে রয়েছে দানব রাজা কংস কিশোর কৃষ্ণকে বধ করতে উদ্যত, সারস গলার দানব বাকাসুর হত্যা, স্বর্ণ দানব কলিকায়ে দমন, লম্বা সরু নৌকায় কৃষ্ণের আনন্দ ভ্রমণ ইত্যাদি পোড়ামাটির ফলকগুলোতে ফুটে উঠেছে। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মন্দিরটি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এতে মন্দিরের উপরের রত্নসমূহ ভেঙে পড়ে।

শীতের মৌসুমে পিঠাপুলির কারণে উত্তরের এই জনপদ সব থেকে বেশি জনপ্রিয়। তবে এ সময় এখানে ঘুরতে আসলে অবশ্যই শীতের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে।

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | রংপুর সংবাদ.কম
Theme Customization By NewsSun