রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দের পরপরই আনুষ্ঠানিক প্রচারকাজ শুরু করেছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এর মধ্য দিয়ে মহানগরীজুড়ে শুরু হলো ভোটের প্রচারণার উৎসব। প্রার্থীরা ভোটের জন্য নগরবাসীর কাছে ইতিমধ্যে ছুটতে শুরু করেছেন। প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই মাইকিং শুরু করেছেন প্রার্থীরা। শুরু হয়েছে লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার সাঁটানো। অনুষ্ঠিত হচ্ছে পথসভাও। তবে প্রচারণায় সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছে সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
এর আগে শুক্রবার সকালে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন। এ দিন মেয়র পদে ৯ জন, ১১ সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৬৭ জন ও ৩৩ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭৯ জনসহ মোট ২৫৫ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
প্রতীক পাওয়ার পরে নগরীসহ প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা ও চায়ের দোকান নির্বাচনি আলোচনায় সরগরম। আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে ভোটের হিসাব-নিকাশ। জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বসে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইসলামী আন্দোলন, জাকের পার্টিসহ অন্যদলের প্রার্থীরা। তারাও তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মাঠে নেমেছেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৯ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন নগরবাসী।
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া (নৌকা), জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল (হাতপাখা), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের (ইনু) প্রার্থী শফিয়ার রহমান (মশাল), খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু (দেয়াল ঘড়ি), জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান (ডাব), স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বনি (হরিণ) ও সদ্য বহিষ্কৃত মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সাবেক মেয়র মরহুম সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুর বোনের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলনকে (হাতি) প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এদিকে প্রতীক পেয়েই শুক্রবার বেলা ১১টায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর পর তিনি মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ইশতেহার ঘোষণা করেন। পরে মুলটোল এলাকায় পথসভা করেন।
এর আগেই জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙল মার্কার মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা মুন্সিপাড়াস্থ মাওলানা কেরামত আলী (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। পরে দর্শনায় পল্লীনিবাসে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচএম এরশাদের কবর জিয়ারত করে খামারমোড়স্থ জাতীয় পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করেন। পরে সন্ধ্যায় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন।
এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন হাতি প্রতীকে প্রচারণা শুরু করেছেন। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রচারণা শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত, এবার তৃতীয়বারের মতো রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৭ ডিসেম্বর ২২৯টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।
Leave a Reply