উত্তরের জনপদের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে একসময় তামাক আর ভুট্টা চাষাবাদ হলেও এখন এই জেলায় চাষ হচ্ছে কমলা ও মালটা। অন্যান্য কৃষি ফসলের পাশাপাশি বান্যিজিকভাবে ফলের চাষ করে মঙ্গা জযের স্বপ্ন দেখছেন এ অঞ্চলের কৃষক। বারি মালটা, দার্জিলিং কমলা, চায়না কমলাসহ বিভিন্ন ফলের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে উত্তরের এই জনপদে। এতে শত শত মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ার পাশাপাশি স্বল্পমুল্যে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ ও উচ্চভিলাসী ভিনদেশী এসব ফল হাতের নাগালেই কিনতে পারছেন এখানকার মানুষ।
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী, হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম, হাড়িভাঙ্গা, মহেন্দ্রনগর এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশতধিক কমলা ও মাল্টার বাগান। চলতি মৌসুমে এ জেলায় এসব ফলের ভাল ফলন হওয়ায় কমছে আমদানি নির্ভরতা। ফলে এখানকার উৎপাদিত সুস্বাদু ফল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রংপুর-বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করা হচ্ছে। আর এ মৌসুমে ভাল দাম পাওয়ায় খুশি কমলা ও মাল্টা বাগান মালিকরা।
বাগান মালিক একরামুল হক জানান, হাড়িভাঙা এলাকায় বিমানবাহীনীর ৪ একর যায়গা লিজ নিয়ে তিনি কমলা ও মাল্টার চাষ শুরু করেন। প্রথমে তার বাগানে আড়াই হাজার মালটা ও ১ হাজার কমলার গাছ লাগান। তিন বছর পরিচর্চা করার পর সেই বাগানের গাছে ফল আসতে শুরু করে। গত বছর বাগান থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেন তিনি। এ বছর কোটি টাকার ফল বিক্রি করার সম্ভাবনার কথা জানান বাগান মালিক একরামুল।
মাল্টা বাগান দেখতে আসা মনিরুজ্জামান জানান, আমাদের লালমনিরহাটে এত সুন্দর ফলের বাগান সত্যি প্রশংসার দাবিদার। মনে হচ্ছে আমরা নেপাল কিংবা ভুটানে বেড়াতে এসেছি। এ অঞ্চলে আরও ফলের বাগান বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া দরকার, এতে লাভের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, লালমনিরহাটের বেশকিছু এলাকায় বিভিন প্রজাতির কমলা ও মালটা চাষ হয়েছে। বাজারে ফলের প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। আমরা বাগান উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করছি। এরফলে এখানে ফলচাষী যেমন বাড়ছে তেমনি দিন দিন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে।
Leave a Reply