রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দলীয় সভাপতির এই পদ থেকে কেন স্থায়ীভাবে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না, তা ১৫ দিনের মধ্যে অবগত করতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল কমির রাজু সাধারণ সভা আহ্বান করেন। জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আহমেদের সভাপতিত্বে সভা শুরুর পর উপস্থিত নেতাকর্মীরা মমতাজ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে তার স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করেন।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকালে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া সভা বিকেল ৪টার দিকে শেষ হয়। সভায় মমতাজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত না থাকলেও জেলা কমিটির বেশির ভাগ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের ৫৩ জন সদস্য সভাপতি মমতাজউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে গুরুতর বেশকিছু অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে চিঠি দেন। অভিযোগগুলোর মধ্য ছিল, জেলা পরিষদ নির্বাচন, হারাগাছ পৌরসভা নির্বাচন, বিভিন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ, দলীয় সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করা, কমিটির নিয়মিত সভা আহ্বান না করাসহ দলীয় নীতি-আদর্শ পরিপন্থি আরও বেশকিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।
সভার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দীনের সভাপতিত্বে ২০১৯ সালে মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। অথচ ভেঙে দেওয়া ওই কমিটিকে নিয়েই অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের অনুমতি নেন। ২০ নভেম্বর রোববার এই সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও পরে তা স্থগিত করে দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।
সভা শেষে জেলা আওয়ামী লীগের জেষ্ঠ সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইলিয়াস আহমেদ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে তাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া এবং ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে মমতাজ উদ্দিন আহমেদের অবর্তমানে সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব কে পালন করবেন, সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান অ্যাডভোকেট ইলিয়াস। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে সহ-সভাপতিদের মধ্য থেকে এই দায়িত্ব পালন করার কথা।
এদিকে কমিটি থেকে অব্যাহতির বিষয়ে মমতাজউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শনিবারের সভাটি করা হয়েছে তাকে না জানিয়ে। তিনি বলেন, যে সময় দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেদের মধ্যেকার সব ভেদাভেদ ভুলে আগামী নির্বাচনে দলের বিজয় নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে তখন এমন ঘটনা নেত্রীর বিরোধীতা। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করছেন বলে জানান।
Leave a Reply