রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে যমুনেশ্বরী ও ঘাঘট নদী। নদী দুটির বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে অবাধেই বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র। ড্রামট্রাক দিয়ে বালু বহন করার কারণে এর আগে মাসিমপুর-মরাহাটি রোডের একটি কালভার্ট ভেঙ্গে গিয়েছিল। এবার বালুভর্তি ড্রাম ট্রাকের চাপায় অকালেই ঝরেছে এক স্কুলছাত্রের প্রাণ। ১৫ বছর বয়সী ফাহিম মিয়া উপজেলার বলদীপুকুর শাহ্ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
বুধবার (৯ নভেম্বর) ভোর আনুমানিক চারটার দিকে শঠিবাড়ী-আফতাবগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের এজরাপাড়া এলাকায় ড্রাম ট্রাকের চাপায় ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়। নিহত ফাহিম মিয়া উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের তাজনগর শোলাগাড়ী গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে।
নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, বাবার অভাব অনটনের সংসারে ফাহিম লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঝে মাঝে শ্রমিকের কাজ করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাতেন। সে ঘটনার দিন ট্রাক্টরের হেল্পার হিসেবে ওই এলাকায় কাজ গিয়েছিল। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বালুভর্তি ড্রাম ট্রাকটি ট্রাক্টরটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। সরকারি কালভার্ট ভেঙ্গে ফেলাসহ রাস্তাঘাট ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলেও চক্রটি অবাধেই বালু উত্তোলন করে আসছে। এতকিছুর পরেও কোন এক অদৃশ্য কারণে প্রশাসন যেমন নিরব রয়েছে তেমনি স্থানীয়াও মুখ খোলার সাহষ পাচ্ছে না। কারণ চক্রটিতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিক জড়িত রয়েছে। ফলে দিনের পর দিন তারা অবাধেই তাদের বালুর ব্যবসা চালিয়ে আসছে। বড় বড় ড্রাম ট্রাকে করে বালু বহন করার কারণে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলেও, যেন দেখার কেউ নেই।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান জানান, এ ঘটনায় ড্রাম ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। ছেলেটির লাশ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। কোন মামলা হয়েছি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবশ্যই মামলা হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply