দেশের ৬৪ জেলার ৪৯২ উপজেলার সব ইউনিয়নে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। দুই বছর মেয়াদি এ কার্যক্রমের আওতায় ১০ লাখ ৪০ হাজার নারীকে বাছাই করা হবে। তারা ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে দুই বছরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবেন। এছাড়া ২০২৫-২০২৬ সালে ১৫ লাখ উপকারভোগীকে এই কর্মসূচির আওতায় সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, তথ্য আপা, স্থানীয় কম্পিউটার দোকান থেকে ১০৯ ও ৩৩৩ হটলাইন নম্বরে কল করে এই কর্মসূচিতে আবেদন করা যাবে। আবেদন প্রক্রিয়া চলবে ৭ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট কার্যক্রমের (ভিডব্লিউবি) ২০২৩-২০২৪ চক্রের উপকারভোগী নির্বাচনের জন্য ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট মিস ওয়েবপোর্টাল এবং ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট অ্যাপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এটি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বাস্তবায়িত দেশের গ্রামীণ দুঃস্থ নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে একটি বৃহত্তর সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি। যা নারীদের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, পুষ্টিহীনতা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা দূর করে আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এ কার্যক্রমের উপকারভোগী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অস্বচ্ছল, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত নারী, যাদের পরিবারের নিয়মিত উপার্জনক্ষম সদস্য বা নিয়মিত আয় নেই এমন নারী এ কার্যক্রমের উপকারভোগী হবেন। যারা ভূমিহীন ও নিজ মালিকানা জমির পরিমাণ ০.১৫ শতকের কম, এমন ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারী ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
যেসব পরিবার দৈনিক দিনমজুর হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে ও মাটির দেয়াল/পাটকাঠি বা বাঁশে তৈরি ঘরে থাকে, যে পরিবারে কিশোরী বা ১৫-১৮ বছর বয়সী মেয়ে, অটিজম/প্রতিবন্ধী সন্তান এবং বিদেশ থেকে প্রত্যাগত অভিবাসী নারীরা এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হালনাগাদ করা উপজেলার পোভার্টি ম্যাপ অনুযায়ী উপজেলাভিত্তিক উপকারভোগী নির্বাচন করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন ও অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিল বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সূচির প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, উপকারভোগীরা সঞ্চয় ব্যবস্থাপনার আওতায় প্রতি মাসে নিজ অ্যাকাউন্টে দুইশ চল্লিশ টাকা সঞ্চয় করবে। যা হবে ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রারম্ভিক মূলধন গঠন। সঞ্চয় করা এ অর্থ এবং প্রশিক্ষণে পাওয়া জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তারা দুই বছর পরে নিজেরাই ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে পারবে।
এর ফলে তারা আয় বর্ধক ও ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে আশা প্রকাশ করে সচিব বলেন, দেশের অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট কার্যক্রমের এই ১০ লাখ ৪০ হাজার নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।
Leave a Reply