রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের একটি মোড়ে রাশেদ মিয়ার ছোট মুদির দোকান রয়েছে। সেই দোকানে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিস্কিট কিনতে গিয়েছিলেন ৮ বছর বয়সী ৩য় শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রী। ওই মুদির দোকান থেকে বাড়িতে ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে আরও নাস্তা ও ১০ টাকা দেয়ার লোভ দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন অভিযুক্ত শাহাআলম মিয়া (৫০)। পেশায় রংমিস্ত্রি শাহাআলম উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের লতিবপুর দক্ষিনপাড়া গ্রামের আলেফ উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় একই গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা রাসেল মিয়া বাদি হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত শাহাআলম। আজ শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে শিশুটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। সরেজমিনে জানা গেছে, ঘটনার দিন সন্ধায় শিশুটি বাড়িতে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে ছিলেন। এসময় বাড়ির লেকজনসহ প্রতিবেশীরা রান্নার কাজ করছিলেন। রাত আনুমানিক আট টার দিকে ওই ছাত্রীর বাড়িতে এসে দুইজন সহপাঠী শিশুটির মাকে ঘটনার বিষয়টি জানান। এরপর শিশুটির মা দরজা খুলে মেয়ের গায়ে মাটি ও পড়নের সেলোয়ার ভেজা দেখতে পেয়ে তাকে গোসল করিয়ে দিয়ে লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়ে এড়িয়ে যেতে চান। কিন্তু ততক্ষণে পুরো গ্রামে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত শাহাআলম পালিয়ে যান। ঘটনারপর ভুক্তভোগী পরিবারটির সাথে স্থানীয় দেওয়ানীরা কয়েকদফা আপোষ করার চেষ্টা করলে শাহআলমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠে আসলে তারা ব্যর্থ হন। রাত পেরিয়ে শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা প্রতিবাদী হয়ে উঠেন এবং ঘটনার সঠিক বিচারের দাবি জানান। পরে থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর বাবা। এছাড়াও অভিযুক্ত শাহআলমের বিরুদ্ধে এর আগেও একই গ্রামের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীসহ ছোট ছোট আরও ৩/৪ জন স্কুল পড়ুয়া শিশুকে নাস্তা ও টাকার লোভ দেখিয়ে আপত্তিকর প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবকরা গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, লোকলজ্জার ভয়ে ঘটনাগুলো কাউকে জানানো হয়নি। তার একের পর এক কর্মকাণ্ডে শংঙ্খিত অভিবাবকরা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির দাবি জানান। ভুক্তভোগী ছাত্রীটির মা আদুরী বেগম বলেন, গতকাল রাত থেকে আজ পর্যন্ত আমার মেয়ে মিঠাপুকুর থানায় আছে। সেখানে আমার স্বামীও আছে। মেয়েকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। ওরা প্রভাবশালী আগেও অনেক অপরাধ করে তাদের বিচার হয়নি। আমরা সঠিক বিচার পাব কি-না খুব চিন্তায় আছি। অভিযুক্ত শাহাআলমের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। তার স্ত্রী স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে গেছেন বলে জানান শাহআলেমর মা। মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেছে। তাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমিরুল কবির সুজন স্টাফ রিপোর্টারঃ
Leave a Reply