স্টাফ রিপোর্টারঃভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সুরমা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ বেশ কিছু নদ-নদীর পানি আবারো বাড়তে শুরু করেছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কুড়িগ্রাম ও সুনামগঞ্জের কয়েকটি এলাকা। এতে করে আবারো বন্যার শংকায় সিলেট, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি জেলার মানুষ।
সিলেটের সবগুলো পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকে বাড়ছে সুরমা নদীর পানিও। পাঁচ দিন টানা রোদের পর মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টি হয়।
তবে চলতি সপ্তাহে হালকা ও ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকলেও বড় ধরনের বন্যা হওয়ার শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। সিলেট পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা জানান, “সিলেটে বৃষ্টি হলেও পানি বাড়ার শঙ্কা নেই। কিন্তু ভারতে বৃষ্টি হলে সিলেটে পাহাড়ি ঢল নামতে পারে। এতে ফের বন্যার অবনতি হওয়ার শঙ্কা আছে।”
পাউবো সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ২৯ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে এক সেন্টিমিটার বেড়েছে। বেড়েছে লোভা নদীর পানিও।
এদিকে, প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় সিলেট শহরের কয়েকটি এলাকায় আবারো পানি জমছে। সুরমার পানি বেড়ে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
গ্রামবাসীরা জানান, গতরাতে আতঙ্কে আমরা কেউ ঘুমাতে পারিনি। রাত জেগে পানি পাহারা দিয়েছি। রাতে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গিয়েছিলো। টানা ১০দিন পর মাত্র দুইদিন আগে ঘর থেকে পানি নেমেছে। এখন আবার ঘরে পানি উঠলে দুর্ভোগের কোনো সীমা থাকবে না।
অন্যদিকে পানি বাড়ছে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও তিস্তাতেও। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী, সদর ও উপজেলার ৩০টি চর ও নদী সংলগ্ন গ্রামের নিম্নাঞ্চল।
এদিকে, বন্যা পরবর্তী ভোগান্তিতে শেরপুর, লক্ষ্মীপুর, জামালপুরসহ ১৬ জেলার মানুষ। বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটের কারণে ভোগান্তি চরমে বন্যা উপদ্রুত এলাকায়।
সিলেটে গত দেড় মাসের ব্যবধানে দুই দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত ১২ মে থেকে সিলেট শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছিল। সে দফায় প্রায় ১০ দিন পর পানি নেমে যায়। কিন্তু ১৪ জুন থেকে টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলা প্রায় তিন দিন সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল।
Leave a Reply