মাহির খানঃভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে সানিয়াজান নদীর পানি বেড়ে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়েছেন বহু পরিবার। ঘর থেকে বের হতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। অন্যদিকে ফের বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানিও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার ভোর ৬টা থেকে সানিয়াজান নদীর পানি বাড়তে থাকে। ফলে হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া, বড়খাতা, গড্ডিমারী ইউনিয়নে সানিয়াজান নদীর তীরবর্তী
নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। অনেক পরিবার রান্না করতে না পেরে শিশু সন্তান নিয়ে পরেছেন বিপাকে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, হঠাৎ সানিয়াজান নদীর পানি বেড়ে এলাকার কয়েকশ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে পানিবন্দি পরিবারগুলো শুকনো খাবার ও ত্রাণ সহায়তা খুবই প্রয়োজন।
পানিবন্দি রমনীগঞ্জ গ্রামের মোজাম্মেল হক (৫৫) জানান, রান্নাঘরে পানি আসায় চুলা জ্বালানোর কোনো ব্যবস্থা নাই। সকাল থেকে বিস্কুট খেয়ে দিন পার করছি। গরু-ছাগল নিয়ে বাঁধের রাস্তায় অবস্থান করছি।
গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল মুঠোফোনে রংপুর সংবাদকে জানান, প্রতি বছর তিস্তার করাল গ্রাসের স্বীকার গড্ডিমারীর মানুষ। গড্ডিমারী তিস্তার তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছেন। পানিবন্দি মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি,শুকনো খাবার ও ত্রাণের প্রয়োজন।
ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, ফকিরপাড়া ইউনিয়নের প্রায় চার ওয়ার্ডে প্রায় ১২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ত্রাণ সহায়তার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদৌলা বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সানিয়াজান নদীর পানি বেড়েছে। তবে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন বলেন,উপজেলার পানিবন্দি হয়েছে চারটি ইউনিয়নের লোকজন। তবে কী পরিমাণ লোকজন পানিবন্দি হয়েছে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরিবারগুলোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে ত্রাণ সহায়তার আবেদন করা হয়েছে। ত্রাণ সহায়তা পেলে দ্রুত পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হবে।