নিজস্ব প্রতিবেদকঃঈদুল ফিতর ও গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে ২১ দিন বন্ধ রয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। এ অবস্থায় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপরও বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে জোর করে প্রবেশের চেষ্টা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ফয়সাল আযম ফাইন।
বহিরাগত নিয়ে প্রবেশ করতে বাধা দিলে তিনি প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তাকে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান তিনি।
মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইজার আলী মুচলেকা দিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ফাইন বহিরাগত তিন বান্ধবী ও স্বজনদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর আসানুজ্জামান আশান এবং আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত সদস্যরা ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জানিয়ে তাদের যাওয়ার অনুরোধ জানান। এতে ফাইন ক্ষিপ্ত হয়ে সহকারী প্রক্টর আশান ও সেখানে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত সদস্যদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা এসে ফাইনকে নিয়ে যান।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতা ফোন করে তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। পরে আটক ছাত্রলীগ নেতা মুচলেকা দিয়ে ঘটনার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পান।
এসআই ইজার আলী বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফাইনকে আটক করা হয়েছিল। পরে সহকারী প্রক্টরের কাছে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির এক কর্মকর্তা বলেন, ফাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। ঈদ উপলক্ষে ১৭ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এরপরও তিনি তিন বান্ধবী ও স্বজনদের নিয়ে ক্যাম্পাসে জোর করে প্রবেশ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফয়সাল আযম ফাইন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। মূলত ওই সময় আমি ক্যাম্পাসে ঢুকছিলাম। তখন আমার এক পরিচিত ছোট ভাই তার দুই বান্ধবীকে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে চেয়েছিল। আমাকে ঢুকতে দেখে তারাও এগিয়ে আসে। তখন তাদের গেটের সামনে আটকে দেওয়া হয় এবং পরিচয়পত্র দেখতে চান নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত লোকজন। আমি অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর আসানুজ্জামান আশানের কাছে জানতে চাই যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কতজনকে আপনারা পরিচয়পত্র দিয়েছেন? এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয় ওঠেন।’
ফাইন আরও বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন এমফিল করছি।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও প্রাক্তন ছাত্র ফাইন তিন জন বহিরাগতকে নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করে এবং সহকারী প্রক্টরের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। এ ঘটনায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিয়ে সে ছাড়া পেয়েছে।
Leave a Reply