লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
হিমেল হাওয়ায় আর ঘন কুয়াশায় কাঁপছে দেশের উত্তরের হিমালয়ের পাদদেশের জেলা লালমনিরহাটের মানুষ।
শৈত্যপ্রবাহের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত চার দিনও জেলায় সূর্যের দেখা মিলেনি।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে ঘন কুয়াশা কেটে গেলেও বাহিরে বইছে হিমেল হাওয়ায়। হিমেল হাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ।
এ দিকে জেলা লালমনিরহাটে ঠা-ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। গত চার দিনে ডায়রিয়ায়, নিউমোনিয়া ও শীতজনীত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে শিশুসহ ৬৩ জন।
লালমনিরহাটের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ১৩টি নদ-নদী তীরবর্তী ৬৩টি চরের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষসহ নি¤œ আয়ের শ্রমজীবীরা। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
হাপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, হৃদরোগসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গোবাদিপশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে।
শনিবার সকালে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সাধুর বাজার, নিজ গড্ডিমারী, তালেবমোড়, দোয়ানী, ছয়আনী, এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ওই এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ কাজকর্ম না পেয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন।
গত ৪ দিনের টানা শৈত্য প্রবাহে তিস্তা পারের হতদরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শনিবার সারা দিনেও দেখা মেলেনি সূর্যের।
লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ কাজ কর্ম না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিস্তা পারের জনজীবন বিপর্ষস্ত হয়ে পড়েছে।
রেল স্টেশনসহ জেলার বিভিন্নস্থানে অবস্থানকারী ছিন্নমুল মানুষগুলো শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। শীতার্ত মানুষগুলো এক টুকরো গরম কাপড়ের জন্য তাকিয়ে আছেন বিত্তবান লোকদের দিকে।
তিস্তা চরের ছয়আনী গ্রামের আমিনুল ইসলাম বলেন, তিস্তা চরে বাসকরি এখন পর্যন্ত কোন সরকারী ভাবে একটা কম্বল পাইনি। দুইদিন থেকে কাজে বের হতে পারি নাই তাই পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ডা.আতিয়ার রহমান জানান,তিস্তা পারের বেশী ভাগ মানুষ এই শীতে কষ্টে আছেন। শীতবস্ত্র চেয়ে উপজেলা পর্যায়ে আবেদন করেছি।
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা.কাসেম আলী জানান, শীতজনীত রোগে আক্রন্ত হয়ে ৫ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে শিশুও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান,শীতার্ত মানুষের জন্য প্রায় ২৮ হাজার কম্বল বিতরন করা হয়েছে। শীতবস্ত্রের চাহিদা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে আবেদন করা হয়েছে। এসব শীতবস্ত্র এলে তা দ্রুত বিতরন করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :