চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সহিংস ক্র্যাকডাউনের মধ্যেই নিরাপত্তা বাহিনীকে ‘সতর্কতা ছাড়াই গুলি চালাতে’ আদেশ দিয়েছেন কাজাখস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান কাসিম-জোমার্ত তোকায়েভ।
তিনি বিক্ষোভকারীদের দস্যু বলেও আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেনছেন, ‘২০ হাজার’ দস্যু প্রধান শহর আলমাতিতে আক্রমণ করেছিল’। আলমাতি হল চলমান বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অস্থিরতায় এ পর্যন্ত ২৬ ‘সশস্ত্র অপরাধী’ এবং ১৮ জন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
টেলিভিশন এক ভাষণে তোকায়েভ বলেন, রাশিয়া এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে পাঠানো শান্তিরক্ষী বাহিনী তার অনুরোধে এসেছে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে তার দেশে অবস্থান করছে।
রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থার (সিএসটিও) বাহিনীতে প্রায় ২৫০০ সৈন্য রয়েছে বলে জানা গেছে। তোকায়েভ সেনা পাঠানোর জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘বিশেষ ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বানকেও ‘অবাস্তব’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন তোকায়েভ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা অপরাধী এবং খুনিদের সঙ্গে কী ধরণের আলোচনা করতে পারি?’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় এবং বিদেশী সশস্ত্র দস্যুদের মোকাবেলা করতে হয়েছে আমাদের। আরও স্পষ্ট করে বললে, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাই আমাদের তাদের ধ্বংস করতে হবে, এবং শীঘ্রই তা করা হবে’।
এর আগে আজ শুক্রবার আলমাতির প্রধান চত্বরের কাছে তাজা গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
এরপর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে কাজাখস্তানের বহু জায়গায় জরুরি আইন জারি করা হয়। অনেক জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় বলে খবর পাওয়া যায়।
প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ এই বিক্ষোভের জন্য তার নিজের সরকারকেই দায়ী করেন এবং প্রধানমন্ত্রীসহ পুরো সরকারকে বরখাস্ত করেন। তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে ‘দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে’ এলপিজির দাম কমানো হবে।
কিন্তু জনগণ তাতে শান্ত হয়নি। তারা আলমাতির মেয়রের অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালায় এবং সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সরকার বলেছে যে ছয় মাসের জন্য জ্বালানির মূল্যসীমা পুনরায় আরোপ করা হবে। কিন্তু এই ঘোষণা বিক্ষোভ থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। এবং অন্যান্য রাজনৈতিক অভিযোগেও মানুষ বিক্ষোভ শুরু করেছে।
কাজাখস্তান একটি কর্তৃত্ববাদী দেশ হিসেবে পরিচিত। দেশটির বেশিরভাগ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল প্রায় ১০০% ভোট পেয়ে জয়লাভ করে। দেশটিতে কার্যকর কোনো রাজনৈতিক বিরোধী দল নেই।
Leave a Reply