বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
বুধবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার যে ধরনের চিকিৎসা দরকার তা দেশে নেই।
এ সময় বিএনপি নেত্রীকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেন মান্না।
গত ১২ নভেম্বর রাতে অসুস্থ বোধ করায় পরদিন শনিবার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথমে কেবিনে রাখা হলেও পরে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
মান্না বলেন, কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সিসিইউতে থাকা এ রকম একজন রোগীকে দেখতে যাওয়া দুরূহ। তবে ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে আমি কথা বলে যা বুঝেছি, বেগম খালেদা জিয়ার যে রকম চিকিৎসা দরকার এখানে সে রকম সুযোগ নেই।
আরও বলেন, ডাক্তাররা সার্বক্ষণিক চেষ্টা করেছেন। খালেদার জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
এ সময় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সরকার যেটা করছে তা পুরোপুরি অমানবিক, জঘন্য কাজ। রাজনীতি, ক্ষমতা, বিদ্বেষ— যত ধরনের খারাপ রিপু আছে, তার সব মিলে সরকার মনুষ্যত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। ডাক্তার ছাড়াও একজন সাধারণ নাগরিকও চাইবে না, এ রকম ক্রিটিক্যাল রোগী এভাবে সঠিক চিকিৎসার সুযোগ না পান।
আরও বলেন, তারা ওবায়দুল কাদেরের জন্য বিদেশে থেকে ডাক্তার এনে বিমানে করে বিদেশে পাঠালেন। রাষ্ট্রপতি গেলেন, প্রধানমন্ত্রীও চিকিৎসা করালেন। তখন দেশে সুচিকিৎসা ছিল না? ওনারা যেতে পারেন আর বেগম জিয়ার জন্য এত বাধা?
আমি আপনাদের মাধ্যমে সবার কাছে আহ্বান জানাবো অপরাপর সকল রাজনৈতিক সামাজিক ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দেরা এমনভাবে চাপ তৈরি করুন যেন সরকার বাধ্য হয় দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে— এ সময় বলেন মান্না।
এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করছেন।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে ২৬ দিন চিকিৎসা শেষে গত ৭ নভেম্বর বাসায় ফিরেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এর পাঁচ দিন পর আবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো।
২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন। করোনা মহামারির শুরুতে গত বছর ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এর পর থেকে এ পর্যন্ত তিনবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
Leave a Reply