চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সতর্ক করেছেন যে, তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করা হবে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র শামিল।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট।
বাইডেন গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই বৈঠক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
সংঘাত এড়াতে উভয় পক্ষই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
এই সম্মেলন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর একটি প্রচেষ্টা ছিল।
তবে তারা সবচেয়ে সংবেদনশীল বিষয়গুলোর একটি তাইওয়ানের স্বাধীনতা ইস্যুতে চুপ থাকতে পারেননি।
চীন তাইওয়ানকে তার একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসাবে দেখে এবং মনে করে যে সেটি একদিন চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে পুনরায় একত্রিত হবে।
যুক্তরাষ্ট্র চীনকে স্বীকৃতি দেয় এবং চীনের সঙ্গে তাদের আনুষ্ঠানিক সম্পর্কও রয়েছে। তবে তাইওয়ানকে আত্মরক্ষায় সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
চীনের রাষ্ট্র-চালিত গ্লোবাল টাইমস বলেছে যে, শি জিন পিং সাম্প্রতিক উত্তেজনার জন্য ‘মার্কিন সমর্থন পাওয়ার জন্য তাইওয়ান কর্তৃপক্ষের বারবার প্রচেষ্টা এবং কিছু আমেরিকান নাগরিকের চীনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাইওয়ানকে ব্যবহার করার বাসনা’কে দায়ী করেছেন।
গ্লোবাল টাইমস এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘আগুন নিয়ে খেলার মতোই এই ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত বিপজ্জনক। যে আগুন নিয়ে খেলবে সে পুড়ে যাবে’।
অন্যদিকে, বাইডেন বলেছেন যে, তিনি ‘স্থিতাবস্থার পরিবর্তন বা তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার একতরফা প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করেন’।
তাইওয়ান নিয়ে কড়া কথা বলা সত্ত্বেও, উভয় নেতা একে অপরকে উষ্ণ অভিবাদন জানিয়ে বৈঠক শুরু করেছিলেন। শি জিন পিং বলেন যে, তিনি তার ‘পুরনো বন্ধু’ বাইডেনকে দেখে খুশি হয়েছেন।
বাইডেন বলেন যে, আমরা দুজন ‘সর্বদা একে অপরের সঙ্গে খুব সততার সঙ্গে এবং অকপটে যোগাযোগ করেছি। অন্য জন কী ভাবছেন তা ভেবে আমরা কখনই দূরে যাই না’।
দুই দেশের ‘যোগাযোগ’ উন্নত করতে হবে এবং ‘একসঙ্গে’ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে মন্তব্য করে শি জিন পিং বলেন, ‘মানবজাতি এখন একটি বৈশ্বিক গ্রামে বাস করে, এবং আমরা একসঙ্গে একাধিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করি। চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা বাড়াতে হবে’।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিককালে দক্ষিণ চীন সাগরে তাইওয়ান নিয়ে দুই দেশের মধ্যে রেষারেষি তুঙ্গে। তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করা চীন সাম্প্রতিককালে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন থেকে শুরু করে একাধিক সামরিক প্রদর্শনের মাধ্যমে পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। দক্ষিণ চীন সাগরে তাই এখন যুদ্ধের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আর তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীনতা হারানোর ভয়ে রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন যে চীনের হাত থেকে তাইওয়ানকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর তাঁর দেশ। আর বাইডেনের এই ঘোষণায় কোনও ভাবেই সন্তুষ্ট ছিল না চীন।
Leave a Reply