নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড খগারচর এলাকায় তিস্তা নদীর শাখা মূখের উপর নির্মিত সেতুর মাঝ বরাবর ভেঙে চারটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। দুই মাথার দুইটি অংশ দেবে গিয়ে মাঝ বরাবর আঁকাবাঁকা হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেতুটি। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সেতুটির দুই প্রান্তে বাঁশের চাঁটাই দিয়ে বাধ্য হয়ে ১৫ থেকে ১৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ওই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশাও। যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি ধসে পড়ে হতাহতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয়েরা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পল্লীশ্রী ও পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ অর্থায়নে ১০ লাখ ৭ হাজার ১৩ টাকা ব্যায়ে নির্মিত হয় সেতুটি। নির্মাণ ত্রুটির কারণে বছর যেতে না যেতেই নড়বড়ে হয়ে পড়ে সেতুটি এরপরও সেতুর সংস্কার করা হয়নি। ভারী বর্ষণ ও তিস্তা নদীর স্রোতে সেতুর মাঝের একটি পিলার দেবে যায়। এতে ধসে না পড়লেও মাঝ বরাবর ভেঙে যায় সেতুটি। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ১নং থেকে ৪নং ওয়ার্ডের প্রায় ১০ হাজারের অধিক লোকজন চলাচল করে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ৫০ ফুট দীর্ঘ ও ৫ ফুট চওড়া সেতুর মাঝ বরাবর ভেঙে গছে। ভাঙা সেতু দিয়ে চলছে ভ্যান গাড়ি, মোটর সাইকেল, বাইসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা তবে ঝুঁকি থাকায় বেশির ভাগ লোকজন হেঁটেই পার হচ্ছে। ঝড়সিংহেশ্বর এলাকার বাসিন্দারা আব্দুর রহিম (৪৫) জানায়, ১নং থেকে ৪নং ওয়ার্ডের ১০-১২ হাজার মানুষের একমাত্র যোগাযোগের রাস্তাই এটি। সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ভাঙ্গা সেতু দিয়েই যাতায়াত করছে প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে অনেকেই।
একই এলাকার ভ্যান চালক আব্দুল কুদ্দুস (৫৫) জানায়, সেতু ভেঙে গেলেও করার কিছু নেই। বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু দিয়েই পারাপার করতে হয় ভ্যান গাড়ি। শিক্ষার্থী যূথী, রুপনা, সোহাগ, শফিকুল, আব্দুর রহমান, বিথী, কনা, মল্লিকাসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ভাঙ্গা সেতু পার হয়েই তারা বিদ্যালয়ে যায়। তবে সেতুটি পার হতে ভয় লাগে। বৃষ্টি হলে হেঁটে পার হওয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। তখন তাদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানায়, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে সেতুর বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ পারাপার করছে সেতু দিয়ে।
উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম জানান, ওই স্থানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠিয়েছি। আশা করি আগামী অর্থবছরে সেতুটি নির্মাণ করা হবে।
Leave a Reply