লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে তিন মাসে প্রেম ও পরকীয়ার টানে প্রায় দেড় শতাধিক নারী বাড়ি ছেড়ে উধাও হয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই বিবাহিত ও ১-২ সন্তানের জননী এবং স্বামী প্রবাসী। এছাড়া রয়েছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।
সম্প্রতি প্রেম-পরকীয়ার এমন তথ্য প্রকাশ্যে আসায় রায়পুরের পাশাপাশি জেলার অন্যান্য এলাকায়ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এসব ঘটনায় অর্ধশতাধিক অভিযোগ রয়েছে থানায়।ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ নারীই প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর সময় বাবা কিংবা স্বামীর বাড়ি থেকে টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে গেছে। আবার ক্ষণিকের মোহ কেটে যাওয়ায় কিছুদিন পরই বাবার বাড়ি কিংবা স্বামীর সংসারে ফিরতে চেয়েছে তারা কিন্তু তা আর হয়নি।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ ও অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, পরকীয়ার অধিকাংশ ঘটনা রায়পুর পৌর শহরের। নানা সুযোগ-সুবিধার কারণে এখানে আবাস গড়ে তোলা অধিকাংশই প্রবাসীর স্ত্রী। স্বামীর অবর্তমানে সন্তানদের স্কুল, সাংসারিক নানা কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হচ্ছে বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে। সেই পরিচয় থেকেই মোবাইলের নম্বর, ফেসবুক আইডি বিনিময়, কথাবার্তা চলতে থাকে। যা এক পর্যায়ে রূপ নেয় গভীর প্রেমে। আর এতেই ঘটছে বিপত্তি।
অনুসন্ধানে আরো উঠে এসেছে, প্রেমের কারণে ঘর ছাড়ার তালিকায় পিছিয়ে নেই তরুণী-ছাত্রীরাও। তাদের মধ্যে অনেকে প্রেমিকের প্রতারণার শিকার হয়ে বাবার বাড়ি ফিরেছে, কেউ আবার হয়েছে অন্তঃসত্ত্বা। পরবর্তীতে উল্টো সেই প্রেমিককের বিরুদ্ধে মামলা করার ঘটনাও কম নেই বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
রায়পুর থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, গত কয়েকদিনে বামনী, সোনাপুর, কেরোয়া, চরবংশী ইউনিয়ন থেকে পাঁচজন গৃহবধূর পরকীয়ার কারণে বাড়ি ছাড়া পালানোর অভিযোগ এসেছে। এছাড়া প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়েছে রায়পুর পৌর এলাকা, চরআবাবিল, রায়পুর সদর, কলাকোপা, চরপাতা ইউনিয়নের পাঁচজন কিশোরী ও ছাত্রী। ব্যতিক্রম ঘটনাও আছে- প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় দুই স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ এসেছে তাদের কথিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, ঘটনাগুলোর তদন্তে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবাসীদের স্ত্রীদের পরকীয়া প্রেমিকরা বয়সে ছোট হয়। এছাড়া তরুণী-ছাত্রীদের প্রেমিকরা হয় বখাটে কিংবা মাদকাসক্ত। এমন বেশ কয়েকজনকে পাওয়া গেছে- প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ কিংবা সর্বস্ব লুটপাট করাই তাদের পেশা।
ওসি আব্দুল জলিল জানান, স্বামী কিংবা পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার কারণেই সমাজে প্রেম-পরকীয়া ও সংসার বিচ্ছেদের মতো ঘটনা বাড়ছে। আইনের মাধ্যমে এসব সামাজিক অবক্ষয় পুরোপুরি রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন প্রযুক্তির সচেতন ব্যবহার, পারিবারিক সচেতনতা, স্বামী-স্ত্রীর সুসম্পর্ক, ধর্মীয় অনুভূতি জাগ্রত করা।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: আলহাজ্ব নুরুজ্জামান আহমেদ, মন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় | সম্পাদক: রেজাউল করিম মানিক | অফিস: ২য় তলা, দৌলত কমপ্লেক্স, গুপ্তপাড়া, রংপুর