বৈশাখ-জৈষ্ঠে যখন ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে মধু মাসের তখন নীলফামারী কিশোরগঞ্জের মাঠ প্রান্তরে সারি সারি বাগান ও বাড়ির উঠোনে লিচু গাছে শোভা পাচ্ছে থোকায় থোকায় লিচু। এ যেন লিচুর রাজ্য।
মিষ্টি ও রসালো স্বাদ আর বৈশিষ্ট নিয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, চায়না-৩সহ দেশি জাতের লিচুর ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। চার পাশের গাছগুলোতে ছেয়ে যাওয়া সবুজ পাতার আঁচলে উকি দিচ্ছে থোকায় থোকায় লিচু। লিচুর মৌ-মৌ গন্ধে মধু আহরণে গাছে গাছে ছোটাছুটিতে ব্যস্ত খুদে মাছি ও মৌমাছিরা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে বাম্পার ফলনে লিচু বিক্রি করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে সংসারে এমনটাই আশা করছেন বাগান মালিকরা। তাই ফলন ভালো পাওয়ার আশায় মুকুল আসার আগেই পরিচর্যা শুরু করেছেন স্থানীয় বাগানী ও চাষীরা। খড়া মৌসুমে বৃষ্টিপাতের অভাবে সেচের মাধ্যমে লিচুর গোড়ায় পানি সরবরাহ করেছেন তারা। ইতোমধ্যে রাজধানীসহ দূর-দূরান্তরের মৌসুমী লিচু ব্যবসায়ীগণ আসতে শুরু করেছেন এখানে। অনেক পাইকার চুক্তিমূল্যে শত শত লিচুগাছ আগাম খরিদ করেছেন।
সরেজমিনে বুধবার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, বাগানে বসত বাড়ী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় থোকায় থোকায় নুয়ে পড়ছে লিচু। পুটিমারী ইউপি’র হিন্দুপাড়া গ্রামের লিচু বাগান মালিক প্রফেসর অনিল চন্দ্র জানান, ৮একর জমির লিচুর বাগানে নজর কাড়া লিচু ধরেছে। ১০/১২দিনের মাথায় লিচু বিক্রি শুরু হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে এ লিচু বিক্রি করে ৪/৫ লক্ষাধিক টাকা আয় করা যাবে। তিনি আরও জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ও রোগ-বালাই থেকে গাছ ও লিচুর গুটিকে মুক্ত রাখতে বালাইনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। পাখ-পাখালি এবং বাদুড় থেকে রক্ষার জন্য লিচু গাছে টিনের পাত্র বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বাহাগিলী ইউপি’র সিনহা এগ্রো ফার্ম ৩ একর, একই ইউপি’র উত্তর দুরাকুটি পশ্চিম পাড়া গ্রামের আলহাজ¦ ছায়েদ হোসেন ১একর জমিতে লিচুর বাগান গড়ে তুলেছেন। তারা জানান, প্রথম থেকে লিচু বাগানে সঠিক পরিচর্যা করায় ব্যাপক লিচুর সমাহার ঘটেছে।
কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান গড়ে উঠেছে।সঠিকভাবে লিচু উৎপাদন হলে এ এলাকায় পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে, অন্যদিকে কৃষক পরিবারে স্বচ্ছলতা আসবে।
Leave a Reply