করোনা মহামারির প্রথম ধাপের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারছেন না শুঁটকি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা। এরই মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের লকডাউনের ধাক্কায় কমে গেছে শুঁটকির বিক্রেতা। ঋণের বোঝার সঙ্গে লোকসানের অঙ্ক গুনে হতাশ অনেকেই। কেউ কেউ লোকসান কাটিয়ে উঠতে না পেরে ব্যবসা থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছেন।
আগে খুচরা-পাইকারি মিলে দিনে যেখানে দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা বিক্রি হতো, সেখানে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকাও হয় না।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মন্দাভাব, লোকসান আর ঋণ পরিশোধ করতে না পারার চাপে অনেকেই শুঁটকি ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। ব্যবসায় ভাটা পড়ায় বর্তমানে বছরে ৩ কোটি টাকার বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। এমন পরিস্থিতিতে আগামী মৌসুমেও শুঁটকিতে লোকসানের আশঙ্কা তাড়া করছে আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীদের দাবি, বছরের অগ্রহায়ণ থেকে আশ্বিন-কার্তিক মাস পর্যন্ত শুঁটকির মৌসুম। এই সময়ে প্রতিবছর তারা (আড়তদাররা) অন্তত ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার শুঁটকি কেনাবেচা করেন। কিন্তু এবার আড়াই কোটিও পার হয়নি। করোনাভীতি, লকডাউন আর বৈশাখী উৎসবে ভাটা- এসব কারণেই ক্ষতির সম্মুখীন বলে জানান তারা।
রংপুর নগরীর ঘাঘট পাড়ায় শুঁটকির আরত এ গত কয়েক বছরে লোকসান সামাল দিতে না পারায় ৪২টি দোকান থেকে কমে এখন তা ১৮টিতে দাঁড়িয়েছে। এক সময় রমরমা ব্যবসা ছিল আড়তজুড়ে। কিন্তু এখন শুঁটকির মৌসুমেও ক্রেতা নেই। আগের মতো দূরদূরান্ত থেকে আসা পাইকারদের আনাগোনাও চোখে পড়ে না। বর্তমানে হাতে গোনা চার-পাঁচ জন বড় আড়তদার এই শুঁটকি ব্যবসা ধরে রেখেছেন। কিন্তু তারাও আছেন লোকসানের ঝুঁকিতে।
আড়ত দার হারুন মিয়া রংপুর সংবাদ কে বলেন, প্রতিদিন তার ক্যাশে দেব থেকে দুই লাখ টাকার হিসাব হতো। কিন্তু গেল কয়েক বছর ধরে পুরো পরিস্থিতি উল্টো। এখন মাসেও 2 লাখ টাকার শুঁটকি বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। রংপুরসংবাদ কে তিনি বলেন, মৌসুমে প্রতিদিন অন্তত ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার শুঁটকি বিক্রি হতো। এখন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ওপরে বেচাকেনা নেই। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে ব্যবসায় দুর্দিন যাচ্ছে। গেল দুই বৈশাখে লকডাউন ও সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে পয়লা বৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠান হয়নি। এতে আমাদের শুঁটকির ব্যবসার ক্ষতি হয়ছে। রহমানের মত সুখী আর ওতে যত ব্যবসায়ী আছে প্রায় সবারই একই অবস্থা পথে বসার মত
এই ব্যবসায়ীর মতে, ঘাঘটপাড়ার চারজন আড়তদার প্রতিবছর পাঁচ কোটি টাকার ওপরে শুঁটকি বেচাকেনা করতেন। কিন্তু এখন শুঁটকি ব্যবসায় ধস নেমেছে। বেচাকেনা নেই। আগের মতো পাইকাররাও আসেন না। এখন বছরে এক থেকে দেড় কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। খুচরা-পাইকারি মিলে দিনে যেখানে এক থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি হতো, সেখানে ১৫ হাজার টাকাও হয় না।
Leave a Reply