1. rkarimlalmonirhat@gmail.com : Rezaul Karim Manik : Rezaul Karim Manik
  2. maniklalrangpur@gmail.com : রংপুর সংবাদ : রংপুর সংবাদ
বিকল্প খাদ্য হিসেবে কাউন চাষে ঝুঁকে পড়েছে সাঘাটার কৃষকরা - রংপুর সংবাদ
রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন

বিকল্প খাদ্য হিসেবে কাউন চাষে ঝুঁকে পড়েছে সাঘাটার কৃষকরা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : শনিবার, ৮ মে, ২০২১
  • ১৫১ জন নিউজটি পড়েছেন

দরিদ্র মানুষের খাদ্য শস্য হিসেবে এক সময়ের অতি পরিচিতি কাউন চাষ সারাদেশে প্রায় বিলুপ্তির পথে গেলেও আবার কৃষি বিভাগের উদ্যোগে নতুন করে উচ্চ ফলনশীল বারী-২ জাতের কাউন চাষের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সাঘাটায় যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা বালু চরে কাউন চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে পড়েছে কৃষকরা। চরে এখন ব্যাপকভাবে কাউন চাষ করতে দেখা যাচ্ছে। এ বছর সাঘাটায় কাউনের ফলন ভালো হওয়ায় সফলতার স্বপ্ন দেখছেন তারা। উল্লেখ্য, গাইবান্ধা কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট বিভাগের তত্ত্বাবধানে নতুন উদ্যোমে কাউন চাষ শুরু করেছে কৃষকরা।

জানা গেছে, সাঘাটা উপজেলার যমুনা নদীর চিনিরপটল, কুমারপাড়া, কালুরপাড়া, হলদিয়া, কানাইপাড়া, গাড়ামারা, দীঘলকান্দি ও পাতিলবাড়িসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলের কৃষকরা নতুন উদ্যোমে কাউন চাষ শুরু করেছে। এক সময় যমুনা নদীর ভাঙন আর বন্যার কারণে দরিদ্রসীমার নীচে ছিল চরাঞ্চলের মানুষের বসবাস। সে সময় এই এলাকাকে মঙ্গাপীড়িত অঞ্চল বলা হতো। ততকালিন কাউনের চালের ভাত, পায়েস ও পান্তা খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো চরাঞ্চলের মানুষ। সেই কাউন এখন আর দরিদ্র মানুষের খাবার নয়, কাউনের চালের পিঠা, পায়েস ও মলাসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী গ্রাম বাংলার পাশাপাশি শহরের মানুষের সখের খাবারে পরিণত হয়েছে।
এক সময় চরাঞ্চল জুড়েই ছিল শুধু বালু আর বালু, এখানে কোন ফসল হতো না, কিছু কিছু জমিতে কেবল কাউনের আবাদ হতো তখন চরের মানুষের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র ভরসাই ছিল কাউনের আবাদ করা আর নদীতে মাছ ধরা।

এর আগে দেশি জাতের কাউনের ফলন কম হওয়ায় দিন দিন কাউনের আবাদ সারাদেশের ন্যায় সাঘাটায় চরাঞ্চল থেকেও হারিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু বর্তমান কৃষি গবেষণায় নতুন উদ্ভাবিত বারী কাউন-২ জাতের বাম্পার ফলন হওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষক এখন আবার কাউন চাষে ঝুঁকে পড়েছে। গাইবান্ধা কৃষি গবেষণা ইন্সটিউট বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলার চরাঞ্চলে কাউনের আবাদ ১ হাজার বিঘা ছাড়িয়ে গেছে।

উপজেলার চিনিরপটল চরের কৃষক ময়নুল হোসেন জানায়, চরের একজন কৃষক ১৫ থেকে ২০ বিঘা পর্যন্ত জমি কাউনের চাষ করে থাকে। এর আগে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা ব্যয়ে দেশী জাতের কাউনের আবাদ করে প্রতি বিঘায় ৪ থেকে ৫ মণ কাউন ফলন হতো। ফলনও কম, বাজারে দামও ছিলো অনেক কম। ফলে কাউন চাষে তেমন লাভ না হওয়ায় দিনদিন কাউন চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ছিল কৃষকরা। বর্তমানে একই পরিমাণ টাকা ও শ্রম খরচ করে বারী কাউন-২ জাতের প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদন হয় ১০-১২ মণ। প্রতি মণ কাউন বাজারে বিক্রি হয় ১ হাজার ৬শ’ থেকে ১ হাজার ৭শ’ টাকায়। খরচও কম, লাভও বেশী। বাজারে চাহিদাও বেশি। এ কারণে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কাউনের আবাদ নতুন উদ্যোমে শুরু করেছেন চরের এসব কৃষক। ইতিমধ্যেই চলতি মৌসুমের কাউন কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। চরের উৎপাদিত এসব কাউন কোন বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয় না, ব্যবসায়িরা কৃষকের বাড়ি থেকে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। এবার কাউনের বাম্পার ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মুখে আনন্দের হাসি ফুটেছে।

গাইবান্ধা কৃষি গবেষণা বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ আল মাহমুদ জানান, বিগত ৫ বছর ধরে বাংলাদেশ কৃষি গবেণার উদ্ভাবিত বারী কাউন-২ সহ বিভিন্ন ধরণের ফসলের পরামর্শে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি এবং নতুন নতুন উদ্ভাবিত জাতের শস্য বীজ ব্যবহার করে অধিক ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে চরাঞ্চলের কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। কৃষিখাতে আরও এগিয়ে নিতে গাইবান্ধা কৃষি গবেষণা বিভাগের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | রংপুর সংবাদ.কম
Theme Customization By NewsSun